গুগলের কিছু ফিচার ও আপস যা সফলতার মুখ দেখেনি

অনলাইনে অত্যন্ত সফল একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গুগল সবার কাছে পরিচিত। বহুল পরিচিত গুগল সার্চ থেকে শুরু করে গুগল ইমেইল, গুগল ম্যাপ, ভিডিও সার্চ ইউটিউব, এবং স্মার্টফোনের জন্য মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম (অ্যান্ড্রয়েড) অনলাইন দুনিয়ায় সবার মনে জায়গা করে নিয়েছে অনায়াসে। অনলাইন ব্যবসায় সফল একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবেও গুগলের রয়েছে বিশ্বব্যাপী সুনাম। এত সব সাফল্য থাকার পরেও প্রতিষ্ঠানটির ব্যর্থ ফিচারের সংখ্যাও কম নয়। অনেক ফিচারই এখনো অনেকের কাছে অজানাই রয়ে গেছে। আসুন জেনে নেই গুগলের কিছু ব্যর্থ ফিচার এর গল্প-

গুগল ভিডিও:
জানুয়ারী ২০০৫ ভিডিও শেয়ারিং এর জন্য গুগল ভিডিও নামে ফিচারটি গুগল উন্মুক্ত করে। এটি ছিল গুগলের নিজস্ব ভিডিও স্ট্রিমিং সেবা। এরপর ২০০৬ সালে বর্তমানের জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং ইউটিউব কেনার পর এই ফিচারটি নতুন ভাবে আর কোন কনটেন্ট আপলোড করা হয়নি। সর্বশেষ ২০১২ সালে চূড়ান্তভাবে গুগল ভিডিও ফিচারটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

গুগল হ্যাংআউটস:
হ্যাংআউটস ছিল গুগলের প্রথম লাইভ স্ট্রিমিং ফিচার। ফিচারটি উন্মুক্ত হওয়ার পর ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং রোমের পোপ ফ্রান্সিস এটি ব্যবহার করেন। এর পর এই ফিচারটি সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জনে ব্যার্থ হয়। সর্বশেষ ২০১৬ সালে হ্যাংআউটস ফিচারটি ইউটিউব লাইভ হিসেবে নতুন ভাবে নতুন রূপে দেওয়া হয়।

গুগল হেলথ:
স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য সরবরাহের জন্য গুগল হেলথ ফিচারটি উন্মুক্ত করা হলেও আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ার কারনে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে গুগল হেলথ ফিচারটি চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

গুগল ওয়েব:
মূলত একজন অপরজনকে মেসেজ পাঠানো এবং একসাথে কয়েকজন মিলে নিজেদের ডকুমেন্ট এডিটের সুবিধা নিয়ে গুগল ওয়েব ফিচারটি চালু করেছিল গুগল। কিন্তু তেমন খুব সাড়া না পাওয়ার কারনে ২০১০ সালে ফিচারটি বন্ধ করে দেয় গুগল।

গুগল নোটবুক:
গুগল ডকসের আগে প্রায় একই রকম সুবিধা নিয়ে গুগল নোটবুক ফিচারটি নিয়ে আসে গুগল। গুগল নোটবুকের সাহায্যে ইউআরএল কপি-পেস্ট এবং প্রয়োজনীয় কিছু লিখে শেয়ার বা প্রকাশ করা যেত। খুব বেশি সাড়া না পাওয়ার কারনে গুগল ২০১২ সালে ফিচারটি সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে দেয় এবং এর সব তথ্য গুগল ডকসে স্থানান্তরিত হয়।

আই-গুগল:
২০০৫ সালে আই-গুগল নামে একটি ফিচার নিয়ে আসে গুগল। আই-গুগল দিয়ে নিজের মতো করে হোমপেজ সাজানো যেতো। আশানুরুপ সফলতা না পাওয়ার কারনে ২০১৩ সালে ফিচারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

গুগল নেক্সাস কিউ:
নেক্সাস কিউ গুগলের নিজস্ব ডিজাইন করা স্ট্রিমিং মিডিয়া প্লেয়ার। সব ধরনের হোম ডিভাইসকে সংযুক্ত করার জন্য এই মিডিয়া প্লেয়ার তৈরি করা হয়েছিল। ২০১২ সালে জাঁকজমকপূর্ণভাবে এই ডিজিটাল প্লেয়ারটি উন্মুক্ত করার পর টেক ব্লগারদের রিভিউয়ের কারনে ব্যাপক সমালোচিত হয়। এরপর মিডিয়া প্লেয়ারটি বিক্রি শুরুর আগেই নেক্সাস কিউ বন্ধ করে দেয় গুগল।

গুগল এক্স:
গুগল এক্সকে ধারনা করা হয় গুগল সার্চ ইঞ্জিনের বিকল্প ইন্টারফেস। ফিচারটি মাত্র একদিনের জন্য উন্মুক্ত করেছিল গুগল। বিভিন্ন ত্রুটির কারণে ২০০৫ সালের ১৬ মার্চ গুগল এক্স ফিচারটি পুরোপুরি বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে গুগল গবেষণা বিভাগের নামকরনের জন্য এক্স নামটি ব্যবহার করেন।

গুগল হেলথ:
সেপ্টেম্বর ২০১০ সালে স্বাস্থ্য ও সুস্থতা-বিষয়ক সচেতন মূলক তথ্য সরবরাহের জন্য গুগল হেলথ ফিচারটি চালু করেছিল গুগল। কিন্তু উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে গুগল হেলথ ফিচারটি বন্ধ করে দেয় গুগল।

গুগল রিডার:
এটি ছিল গুগলের একটি সংবাদভিত্তিক ফিচার, যা বিভিন্ন সংবাদ সাইট বা বিভিন্ন ব্লগ থেকে পাঠকদের জন্য স্টোরি সরবরাহ করত। খুব বেশি সাড়া না পাওয়ায় ২০১৩ সালের মার্চে ফিচারটি বন্ধ করে দেয় গুগল।

গুগল ক্যাটালগ:
২০১১ সালে অনলাইন শপিংয়ের জন্য এই ফিচারটি উন্মুক্ত করে গুগল। আশানুরুপ সফলতা না আসার কারনে ২০১৩ সালে ফিচারটির মোবাইল সংস্করণ বন্ধ করে দেয়া হয়। এর পর প্রায় দুই বছর পর ২০১৫ সালে গুগল এই গুগল ক্যাটালগ ফিচারটির ওয়েব সংস্করণও বন্ধ করে দেয়।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন
প্রযুক্তি সারাদিন