১৯৯৮ থেকে ২০১৯ প্রায় ২১ বছরে পা দিলো গুগল

১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বরে ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিনের হাত ধরে পথচলা শুরু করে গুগল। সে হিসেবে চলতি মাসে বৈশ্বিক সার্চ জায়ান্টটি ২০ পেরিয়ে ২১ বছরে পদার্পণ করেছে। গত দুই দশকে ইন্টারনেট বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে গুগল। ২১ বছরে পদাপর্ণকে কেন্দ্র করে গুগল। ২০০৯ সালে এক গুগল প্রকৌশলী একবার ইন্টারনেট ব্যবস্থা ধসিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি দুর্ঘটনাবশত গুগলের ব্লকড ওয়েবসাইটের রেজিস্ট্রিতে ফরোয়ার্ড স্ল্যাশ বা ‘/’ চিহ্নটি যোগ করে ফেলেছিলেন। যেহেতু প্রায় প্রতিটি ওয়েবসাইটেই ‘/’ চিহ্নটি আছে, তাই ওইসময় অনলাইনে সব ধরনের ওয়েবসাইটে প্রবেশাধিকার বন্ধ হয়ে যায়।

বিশ্বব্যাপী গুগল সার্চে প্রতিদিন লাখ লাখ বিষয় খোঁজা হয়। একেকজন একেক বিষয়ে অনুসন্ধান করে থাকেন। এর মধ্যে কিছু কমন বিষয় থাকে। তবে গুগল সার্চে ১৫ শতাংশ অনুসন্ধানই হচ্ছে একেবারে নতুন। অর্থাত্ যা আগে কখনো সার্চ করা হয়নি। কৌতূহল থেকে মানুষ অজানা নানা বিষয় গুগল সার্চে খোঁজ করে। ২০১৮ সালের এপ্রিলে গুগল প্রথম শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। অর্থাত্ প্রযুক্তি জায়ান্টটির বৈশ্বিক কার্যক্রম নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে চলছে। এর অর্থ হলো গুগল প্রতি এক কিলোওয়াট বিদ্যুত্ খরচ করার সঙ্গে সঙ্গে এক কিলোওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুত্ ক্রয় করছে।

গুগলের জন্মদিন নিয়ে বিভিন্ন রকম তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠানটির মোট ছয়টি জন্মদিন আছে। অবশ্য গুগলের পক্ষ থেকে শুধু ২৭ সেপ্টেম্বরকেই জন্মদিন হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৈশ্বিক সার্চ জায়ান্ট গুগলের হাতে নানা রকম কূটকৌশল আছে। যেমন কেউ যদি ‘এস্কিউ’ (বাঁকা) শব্দটি ইংরেজিতে সার্চ করেন, তাহলে দেখবেন পুরো পেজই একদিকে কাত হয়ে গেছে। অ্যাপোলো ১১-তে চাঁদে মানুষ পাঠাতে যতটুকু কম্পিউটিং ক্ষমতা ব্যবহূত হয়েছিল, এখন মাত্র একটি গুগল সার্চে প্রায় সেই পরিমাণ কম্পিউটিং ক্ষমতা কাজে লাগানো হয়।

প্রতি সেকেন্ডে প্রায় পঞ্চাশ হাজার তথ্য অনুসন্ধান করা হয়ে গুগলে, আর তার জবাব দেয় গুগল। তাহলে হিসেবের নিরিখে দেখা যাচ্ছে প্রতিদিন তিন বিলিয়ন করে অনুসন্ধানকরে গুগল। আর সেই গুগলের আজ শুভ জন্মদিন। যে দিনটিতে আবিষ্কার না হলে আমরা বোধহয় আমাজের অন্যতম উইকিপিডিয়াকে পেতাম না। সেই ২১ বছর ধরে আমাদের জ্ঞানের সম্ভার হয়ে উঠেছে গুগল। ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিনের হাত ধরে গুগলের জন্ম। আর আজ গুগলের কর্মী সংখ্যা ছুঁয়েছে ৮৮ হাজার ১১০ জন। আর সম্পদের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৩০০ বিলিয়ন ডলার। তাই আজ বিশ্বের সবথেকে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিনের জন্মদিনে ডুগল গুগল সেজেছে অন্য ভাবে। এখন সার্চ ইঞ্জিনে গেলেই সেই পুরানো কম্পিউটারের ছবি ভেসে আসছে। তবে ইউটিউবের পক্ষ থেকেও গুগলকে শ্রাদ্ধা জানানো হয়েছে, ভিডিওর মাধ্যমে।

তবে সার্চ ইঞ্জিনের নাম গুগল হল কেন, এই প্রশ্ন মাথায় আসেই। আসলে এই নামের পিছনে রয়েছে এক অজানা গল্প। তা হল একজন প্রকৌশলি আসল নামের বদলে ভুল বানান লিখেছিলেন তাই সেই ভুল বানান থেকেই নাম হয়েছে গুগল। তবে শুধু অজানা তথ্য দেওয়াই নয় ছবি, ভিডিও জিআইএফ প্রদান করে থাকে গুগল। এছাড়াও ১৯০ টি ভাষায় তথ্য সরবরাহ করে গুগল।

আজকের এই ইন্টারনেটের যুগে এখন সকলের হাতে হাতে স্মার্টফোন রয়েছে, ট্যাবলেট রয়েছে, রয়েছে ল্যাপটপ। সবেতেই গুগল রয়েছে। যা মাত্র কয়েক সেন্টেন্দের মধ্যেই পথে, ঘাটে বা যেকোনো জায়গায় তথ্য সরবরাহ করতে সক্ষম। গুগল এখন শুধু একটি সার্চ ইঞ্জিনই নয়, ভবিষ্যতে এখানে থাকবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, স্ট্রিমিংভিত্তিক গেমিং ব্যবস্থা, এমনকি চালকবিহীন গাড়ি প্রযুক্তির নানা খুঁটিনাটি।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন
প্রযুক্তি সারাদিন