আসল হাট্টিমা টিম টিম ছড়াটি মোট ৫২ লাইন

‘হাট্টিমা টিম টিম’ ছড়াটি ছোটবেলায় পড়েনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাংলা ভাষায় লেখা রোকনুজ্জামান খান (দাদাভাই) এর এই ছড়াটি খুবই মজার। যে কোন বয়সের মানুষের পছন্দের একটি ছড়া। কিন্তু মজার ব্যাপার হল সবাই ছড়াটির ৪-টি লাইনই জানেন কিন্তু সত্যিকার অর্থে আসল হাট্টিমা টিম টিম ছড়াটি মোট ৫২ লাইন। সবাই যা জানে সেটা হচ্ছে শেষ ৪ লাইন। সবার জন্য আজকে তুলে ধরলাম ৫২ লাইন দীর্ঘ এই ছড়াটি।

‘টাট্টুকে আজ আনতে দিলাম
বাজার থেকে শিম
মনের ভুলে আনলো কিনে
মস্ত একটা ডিম।
বলল এটা ফ্রি পেয়েছে
নেয়নি কোনো দাম
ফুটলে বাঘের ছা বেরোবে
করবে ঘরের কাম।

সন্ধ্যা সকাল যখন দেখো
দিচ্ছে ডিমে তা
ডিম ফুটে আজ বের হয়েছে
লম্বা দুটো পা।
উল্টে দিয়ে পানির কলস
উল্টে দিয়ে হাড়ি
আজব দু’পা বেড়ায় ঘুরে
গাঁয়ের যত বাড়ি।

সপ্তা বাদে ডিমের থেকে
বের হল দুই হাত
কুপি জ্বালায় দিনের শেষে
যখন নামে রাত।
উঠোন ঝাড়ে বাসন মাজে
করে ঘরের কাম
দেখলে সবাই রেগে মরে
বলে এবার থাম।

চোখ না থাকায় এ দুর্গতি
ডিমের কি দোষ ভাই
উঠোন ঝেড়ে ময়লা ধুলায়
ঘর করে বোঝাই।
বাসন মেজে সামলে রাখে
ময়লা ফেলার ভাঁড়ে
কাণ্ড দেখে টাট্টু বারি
নিজের মাথায় মারে।

শিঙের দেখা মিলল ডিমে
মাস খানিকের মাঝে
কেমনতর ডিম তা নিয়ে
বসলো বিচার সাঁঝে।
গাঁয়ের মোড়ল পান চিবিয়ে
বলল বিচার শেষ
এই গাঁয়ে ডিম আর রবে না
তবেই হবে বেশ।

মনের দুখে ঘর ছেড়ে ডিম
চলল একা হেঁটে
গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে
ডিম গেলো হায় ফেটে
গাঁয়ের মানুষ একসাথে সব;
সবাই ভয়ে হিম
ডিম ফেটে যা বের হল তা
হাট্টিমাটিম টিম।

হাট্টিমাটিম টিম-
তারা মাঠে পারে ডিম
তাদের খাড়া দুটো শিং
তারা হাট্টিমা টিম টিম।’


বিদ্রঃ বাংলাদেশের একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক রোকনুজ্জামান খান জন্ম গ্রহন করেছিলেন ফরিদপুর জেলার পাংশা উপজেলায়। দৈনিক ইত্তেফাকে শিশু-কিশোরদের জন্য উপযোগী কচিকাঁচার আসর বিভাগের পরিচালক হিসেবে তিনি আমৃত্যু দায়িত্ব পালন করেন। শিশু সংগঠনে অসামান্য অবদান রাখায় ২০০০ সালে রোকনুজ্জামান খান স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারে ভূষিত হন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন
প্রযুক্তি সারাদিন